লাস্ট জার্নি

এক ও একাকীত্ত্বের সাথে যে সম্পর্ক সেটা আমরা জীবনে অনেক বার উপলব্ধি করবার অবকাশ পেয়ে থাকি । এক থেকে ই কোনো কিছুর সৃষ্টি তাই সৃষ্টি কর্তা এক ই হয় ,মানুষ একাকী জন্মায় ,তার নিজের কর্ম ফল সে একাই উপভোগ করে ,সে একা একা ই শেষ ভ্রমণ অর্থাৎ মৃত্যুবরণ করে। এক ও একাকিত্ব ই মানুষের প্রকৃত স্বরূপ। কিন্তু এটা কে সংসারী মানুষ ভয় পায় ,একাকিত্ব কে দুঃখ বা শোক বা বিরহ রূপে দেখে এর থেকে পালিয়ে মোহময় জন্মান্তর লাভ করে। অন্যদিকে যোগী ও বিরাগী একাকিত্বের খোঁজে নির্জনতা কে স্বর্গীয় কিংবা মহানন্দ অনুভব করে। যোগী যোগ করতে চায় সেই এক কে ( সৃষ্টিকর্তা ) আর সংসারী বিয়োগ করতে চায় একাকিত্ব কে অর্থাৎ এক ( সৃষ্টিকর্তা ) কে। এক জন চঞ্চল শিক্ষার্থী পড়াশুনায় ফাঁকি দেবার সময়ে সে বুঝতে পারে না তার ফল কি হতে পারে ,কিন্তু পরীক্ষায় ফেল করার পর বুঝতে পারে শিক্ষক ( গুরুদেব ) তাকে যে নিরিবিলি নীরবে নির্জনে একমনে কেন পড়তে বলেছিলো।অথচ এই শিক্ষার্থী এক সময় শিক্ষকের আদেশ কে একরকম মানসিক পীড়া বা নির্যাতন ও মনে করতো , তদ্রুপ চঞ্চল জীবন ও যৌবন এ সংসারী মানুষ একাকিত্ব কে ,নির্জনতা কে ,ভয় পায় , বা মানসিক পীড়া বা নির্যাতন মনে করেন ,পার্থিব মানুষ কোনো বিরহ বা শোক বা একাকিত্ব তার জীবনে এসে গেলেও সে আবার তার একাকিত্ব মিটিয়ে পার্থিব জগতে মিশে থাকে ,সে বিরহ বা শোক কে মেনে নিতে বাধ্য থাকে না কিন্তু তার লাস্ট জার্নি অর্থাৎ মৃত্যু সময়ে সে যখন একা একা যেতে বাধ্য হয় তবেই সে উপলব্ধি করতে পারে এক ও একাকিত্বের অর্থাৎ ঈশ্বর ও মানুষের সাথে কি সম্বন্ধ .যাবার সময়ে সে বুঝতে পারে তার জীবদ্দশায় যে বিরহ ,শোক ,একাকিত্ব এসেছিলো সেটা নিছক এক টা দুর্ঘটনা বা জীবনের দুর্ভাগ্য ছিল না ,সেটা ছিল আরও এগিয়ে যাবার দিব্য সোপান। তবে এই দিব্য সোপান অনেক মানুষ ও চিনতে পেরেছেন এই পৃথিবীতে ,তাদের কে আমরা মহা পুরুষ , মহাত্মা ,যোগী বা বিরাগী কিংবা সন্যাসী প্রভৃতি বলি।যেমন - অনেক সময় কারো স্ত্রী বা স্বামীর মৃত্যু তে বিরহী কোনো শোক গ্রস্ত মানুষ পুনরায় সংসার জীবনে প্রবেশ করে নি , যিনি ওই শোক বা বিরহ কে প্রত্যাখ্যান না করে মেনে নিয়েছেন ,যিনি জীবন কে এক অর্থাৎ সৃষ্টি কর্তার ইশারা মনে করে সৃষ্টি কর্তার ছন্দে ই নেচেছেন তিনি ই বিরাগী হয়েছেন। কারা বিরাগী বা সাধু হয়ে থাকে সেই প্রশ্নের আরও অনেক উত্তর যদিও পাওয়া যাবে কিন্তু এক ও একাকিত্বের মান্যতা সংসারী মানুষ তার জীবদ্দশায় যেমন ই দিক না কেন এটা যে কোনো মতে উপেক্ষিত নয় সেটা তার লাস্ট জার্নি অর্থাৎ মৃত্যুকালীন সময়ে বুঝে যায় যদিও কাউকে বুঝিয়ে যেতে পারেন না।
leave a reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *